ঢাকা,রোববার, ১৯ মে ২০২৪

“কোটি টাকা আত্নসাৎকারী মোজাম্মেল এবার মিথ্যা মামলার মিশনে”

বার্তা পরিবেশকঃ চকরিয়ায় ম্যানগ্রোভ এসেটস লিঃ এর সাবেক বহিস্কৃত এমডি দূর্নীতিবাজ হিসেবে ইতোমধ্যে পরিচিতি পাওয়া মোজাম্মেল হক এবার নিজের অভিযোগ ঢাকতে এবং তার বিরুদ্ধে অভিযোগকারীদের ঘায়েল করতে মিথ্যা মামলার মিশন নিয়ে মাঠে নেমেছেন।
“এ যেন চোরের মা’র বড় গলা”

জানা যায়, চকরিয়ার ডুলাহাজারস্থ কাটাখালির জনৈক মোহাম্মদ হোসেন এর ছেলে এবং এমএলএম কোম্পানির ওয়ারেন্টভুক্ত পরিচালক হেলাল উদ্দিনের ভাই মোজাম্মেল হক ২০১২ইং সালে চকরিয়ার ম্যানগ্রোভ এসেটস লিঃ নামীয় কোম্পানির এমডি হিসেবে নিয়োগ পান।এমডি হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার কিছুদিন যেতে না যেতেই দূর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে অল্প সময়েই “আংগুল ফুলে কলা গাছ” বনে যান মোজাম্মেল হক।

দীর্ঘদিন তিনি কোম্পানির তহবিল তছরুপ করে হিসাব দেন নাই এবং নির্দিষ্ট সময়ে কোম্পানির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) সম্পন্ন করেন নাই বলে জানা যায়। ২০১৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরে ২০১৮ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারী মাত্র একটি এজিএম করেছেন।২০১৮ সালের সেই এজিএম-এ পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন না নিয়ে যেনতেন ভাবে বার্ষিক হিসাব পেশ করায় উক্ত হিসাব সাধারণ সদস্যরা গ্রহণ না করে কোম্পানির তৎকালীন পরিচালক (বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক) সোহরাব মোস্তফা রিকনকে হিসাব সংশোধনে সহযোগিতা করার দায়িত্ব দেন। কিন্তু জনাব মোজাম্মেল হক তার দায়িত্বকালীন উক্ত হিসাব সংশোধন এর কোন উদ্যোগ না নেওয়ায় এবং জনৈক আব্দুস সালামকে কোম্পানির নির্মাণাধীন মার্কেট ইসলাম প্লাজার প্রথম বিক্রিত ২৪নং দোকান বিক্রয়ে চুরি ও আত্নসাৎকৃত ২ লাখ টাকা বোর্ড অব ডিরেক্টরস এর ১২/৫/১৮ইং তারিখের সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কোম্পানিকে ফেরত প্রদানের তথ্য প্রকাশ পাওয়ায় উপস্থিত সাধারণ শেয়ার হোল্ডাররা  মোজাম্মেল হকের ব্যাপারে তাৎক্ষণিক আপত্তি তুলে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।

উক্ত তদন্ত কমিটি প্রায় তিন মাস তদন্ত করে এমডি মোজাম্মেল হকের বিরুদ্ধে প্রায় অর্ধকোটি টাকার আত্নসাত এবং অনিয়মের অভিযোগ ২০১৮ সালে তৎকালীন পরিচালনা পরিষদ বরাবর জমা দিলে একই দিন পরিচালনা পর্ষদ উক্ত বিষয়ে মোজাম্মেল হককে শোকজ করেন। মোজাম্মেল হকের বিরুদ্ধে শোকজ এর জবাব ২০১৮ সালের ২৭ মে এর মধ্যে পরিচালনা পর্ষদ বরাবর প্রদানের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়।কিন্তু উক্ত শোকজের জবাব দিতে মোজাম্মেল হক বারবার সময় চেয়েও দীর্ঘ দুই বছর কালক্ষেপণ করেন বলে জানা যায়।পরবর্তীতে পরিচালনা পরিষদের চাপে প্রায় দুই বছর পর ২০২০ সালের ২৭ জুলাই দায়সারা ভাবে হিসাব ও শোকজ এর দেওয়ার পর বিধি মোতাবেক উক্ত শোকজের জবাব পর্যালোচনার জন্য গঠিত পাঁচ সদস্যের অপর একটি কমিটি পর্যালোচনা করে এবং প্রাপ্ত হিসাব অভ্যন্তরীণ অডিট কমিটি ও চার্টার্ড একাউন্টেন্ট কর্তৃক অডিট করার পর মোজাম্মেল হকের বিরুদ্ধে ৬,৫৬,৫৩,২৩৬/- (ছয় কোটি ছাপ্পান্ন লক্ষ তেপ্পান্ন হাজার দুইশত ছত্রিশ) টাকা অনিয়ম ও তহবিল তছরুপের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় মোজাম্মেল হকের উপস্থিতিতে বিগত ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২১ইং তারিখে অনুষ্ঠিত কোম্পানির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম)- এ উপস্থিত শেয়ার হোল্ডারবৃন্দ সর্বসম্মতভাবে মোজাম্মেল হককে এমডি পদ থেকে অপসারণ করে এবং তছরুপকৃত অর্থ পরবর্তী সাত দিনের মধ্যে কোম্পানির একাউন্ট বরাবর ফেরত প্রদানের নির্দেশ দেয়।

উক্ত সময়ের মধ্যে তছরুপকৃত অর্থ ফেরত প্রদানে ব্যর্থ হওয়ায় জনাব মোজাম্মেল হকের বিরুদ্ধে কোম্পানির পরিচালনা পরিষদ ১৮ মার্চ ২০২১ ইং তারিখ একখানা লিগ্যাল নোটিশ প্রেরণ করে।জনাব মোজাম্মেল হক উক্ত লিগ্যাল নোটিশ পেয়ে কোম্পানি বরাবর ১১ এপ্রিল ২০২১ ইং তারিখের ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিঃ এর তার একাউন্টের ৩,২৮,২৬,০০০/- (তিন কোটি আটাশ লক্ষ ছাব্বিশ হাজার) টাকার একখানা চেক প্রদান করেন।উক্ত চেক ম্যানগ্রোভ কর্তৃপক্ষ বিগত ১১ এপ্রিল ২০২১ ইং তারিখ নগদায়নের জন্য ব্যাংকে উপস্থাপন করলে “অপর্যাপ্ত ফান্ড” মর্মে চেকটি ব্যাংক কর্তৃক ডিসঅনার হয়।চেক ডিসঅনার হওয়ায় ম্যানগ্রোভ কর্তৃপক্ষ বিগত ১৩ এপ্রিল ২০২১ ইং তারিখ জনাব মোজাম্মেল হককে আইনজীবীর মাধ্যমে এন.আই. এ্যাক্ট এর ১৩৮ ধারায় একখানা নোটিশ প্রেরণ করে এবং নোটিশ প্রাপ্তির ৩০ দিনের মধ্যে সমুদয় অর্থ পরিশোধের জন্য অনুরোধ করে।উক্ত সময়ের মধ্যে টাকা পরিশোধ না করে বিভিন্ন চলচাতুরীর আশ্রয় নেওয়ায় ম্যানগ্রোভ কর্তৃপক্ষ বিগত ২৭ মে ২০২১ ইং চট্টগ্রাম সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মোজাম্মেল হকের বিরুদ্ধে এন.আই.এ্যাক্ট এর ১৩৮ ধারায় মামলা দায়ের করে।

উক্ত মামলার খবর পেয়ে মোজাম্মেল হক তথ্য গোপন করে শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে ০১ জুন ২০২১ ইং তারিখ চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ম্যানগ্রোভের চেয়ারম্যান ও বর্তমান এমডির এর বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন বলে জানা যায়।

পাঠকের মতামত: